বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট

বৃহস্পতিবার GBP/USD পেয়ারের দরপতন অব্যাহত ছিল, তবে এটির মূল্য এখনো সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যেই রয়ে গেছে এবং EUR/USD পেয়ারের মতো ব্রেকআউট করতে পারেনি। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, ব্রিটিশ পাউন্ডের দরপতনের কারণ ইউরোর চেয়ে দুইগুণ বেশি ছিল। প্রথমত, ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠকে গৃহীত অবস্থানকে হকিশ বা কঠোর হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে, কারণ ট্রেডাররা আশা করছিল যে জেরোম পাওয়েল ২০২৫ সালে আবার মুদ্রানীতির নমনীয়করণ শুরু হওয়ার ইঙ্গিত দেবেন—কিন্তু এমন কোনো বিবৃতি আসেনি। দ্বিতীয়ত, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় এবং মুদ্রানীতি কমিটির দুই সদস্য এমনকি সুদের হার ০.৫% হ্রাসের পক্ষে ভোট দেন। যেহেতু ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের এই সিদ্ধান্ত আগে থেকেই মার্কেটে মূল্যায়িত ছিল না (যেমনটি প্রায়ই ঘটে), তাই বৃহস্পতিবার পাউন্ডের দরপতন ঘটার কথা ছিল। তাই আমরা বুধবার এবং বৃহস্পতিবার উভয় দিনই এই পেয়ারের দরপতনের প্রত্যাশা করছিলাম—যেটা ঘটেছে ঠিকই, কিন্তু তা এত দুর্বল ছিল যে এর ফলে মূল্যের সাইডওয়েজ রেঞ্জ থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। একইসঙ্গে, ট্রাম্প যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন, তবে এরও বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
অবিশ্বাস্যভাবে, বৃহস্পতিবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের ট্রেডিং টেকনিক্যাল পরিস্থিতির সাথে যথেষ্ট সঙ্গতিপূর্ণ ছিল, যদিও মূল্য বারবার দিক পরিবর্তন করেছে। 1.3329 লেভেলের কাছাকাছি প্রথম সেল সিগন্যাল তৈরি হয় এবং তা লাভজনক হয়, সেইসাথে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের ফলাফল ঘোষণার সময় 1.3259 লেভেল থেকে তিনবার রিবাউন্ডের ফলে করা ট্রেডও লাভজনক ছিল। তৃতীয় সেল সিগন্যাল আবারও 1.3329 এর আশেপাশে তৈরি হয়, যা কিছুটা অস্পষ্ট হলেও শেষ পর্যন্ত মূল্য নিকটতম টার্গেট লেভেলে পৌঁছায়। এই তিনটি সিগন্যাল থেকে আনুমানিক ১২০–১৩০ পিপস পর্যন্ত লাভ অর্জন সম্ভব ছিল।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখনো পুরোপুরিভাবে ট্রাম্পের পদক্ষেপের উপর নির্ভর করছে, যার ফলে ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য উচ্চ লেভেলে স্থিতিশীল রয়েছে বা অন্ততপক্ষে বড় ধরনের দরপতন এড়িয়ে যাচ্ছে। পেয়ারটির মূল্য এখনো সাইডওয়েজ চ্যানেল থেকে বের হতে পারেনি, মার্কেটের ট্রেডাররা মৌলিক প্রেক্ষাপটের প্রতি আংশিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে এবং সামষ্টিক প্রতিবেদন প্রায় উপেক্ষিত রয়েছে। তাই, যদি পাউন্ডের মূল্য রেঞ্জ ব্রেক করে নিচের দিকে নামে, তাহলে প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে অন্তত ডলার শক্তিশালী হতে পারে। এখনো পর্যন্ত, পাউন্ডের দরপতনের সম্ভাবনা নেই বলেই মনে হচ্ছে।
শুক্রবার যেকোনো দিকেই GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে, কারণ এটির মূল্য এখনো সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যেই রয়েছে। ফেড ও ব্যাংক অব ইংল্যান্ড উভয়ের বৈঠকের সিদ্ধান্তই ডলারকে সমর্থন করেছে, কিন্তু সেটি ডলারকে সামগ্রিকভাবে খুব বেশি সাহায্য করতে পারেনি। উল্লেখযোগ্যভাবে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তির খবরে ডলারের শক্তিশালী হওয়ার কথা, দুর্বল হওয়ার নয়। যদি শুল্ক আরোপের সময় ডলার দুর্বল হয়, তাহলে বাণিজ্য সংঘাত প্রশমনের সময় ডলারের শক্তিশালী হওয়া উচিত।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বর্তমানে আপনি নিচের লেভেলগুলোতে ট্রেড করতে পারেন: 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3145–1.3167, 1.3203, 1.3259, 1.3329, 1.3365, 1.3421–1.3440, 1.3488, 1.3537, 1.3580–1.3598।
শুক্রবার যুক্তরাজ্যে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি বক্তব্য দেবেন, তবে যেহেতু ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠকের ফলাফল একদিন আগেই ঘোষণা হয়েছে, তাই কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিবৃতি আসার সম্ভাবনা কম।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।