বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট

বুধবার পুরো দিনজুড়ে কোনো নির্দিষ্ট মৌলিক প্রেক্ষাপট না থাকলেও GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল। তার আগের দিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় কিছুটা দুর্বল এসেছিল, যা আনুষ্ঠানিকভাবে ফেডারেল রিজার্ভ এবং জেরোম পাওয়েলের মুদ্রানীতি সংক্রান্ত অবস্থান নমনীয়করণের ইঙ্গিত দিয়েছিল। তবে, আমাদের ধারণা—মার্কেটের ট্রেডাররা কেবলমাত্র আবারও ডলার বিক্রির জন্য একটি অজুহাত খুঁজছিল। প্রশ্ন হচ্ছে—কখন থেকে মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদনের সামান্য দুর্বল ফলাফল পুরো একদিন ধরে মার্কেটে মুভমেন্ট সৃষ্টি করতে শুরু করেছে? কেন যুক্তরাজ্যের বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদন উপেক্ষিত হলো? কেন ফেডের স্পষ্ট অবস্থান—যেখানে জেরোম পাওয়েল স্পষ্টভাবে বলেছেন যে নিকট ভবিষ্যতে মুদ্রানীতি নমনীয় করা হবে না এবং মূল্যস্ফীতি প্রায় অনিবার্যভাবে বাড়বে—তা বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না? ফলে, ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হওয়ার আগেই তা থেমে গেছে। ৪-ঘন্টার চার্টে দেখা যাচ্ছে, এই পেয়ার গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই নিম্নমুখী প্রবণতায় কম, বরং বেশি সময় ধরে সাইডওয়েজ রেঞ্জে ট্রেড করছে। মার্কেটে এখনো মার্কিন ডলারের প্রতি গভীর অনিশ্চয়তা বজায় রয়েছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বুধবার ৫-মিনিট টাইমফ্রেমে দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়। প্রথমে, পেয়ারটির মূল্য 1.3329 লেভেল ব্রেক করে উপরের দিকে যায়, কিন্তু মূল্য মাত্র ১৫ পিপস বৃদ্ধি পেয়েছিল—যা ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করার জন্যও যথেষ্ট নয়। পরবর্তী মুভমেন্ট ছিল 1.3329 লেভেলের নিচে একটি কনসোলিডেশন, এবং এই সিগন্যালটি কার্যকর প্রমাণিত হয়, কারণ দিনের শেষে মূল্য নিকটতম লক্ষ্যমাত্রা 1.3259-এ পৌঁছে যায়। ফলে দ্বিতীয় ট্রেডটি প্রথমটির ক্ষতি পূরণ করে এবং সামগ্রিকভাবে অল্প পরিমাণে লাভ করা সম্ভব হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখনও মূলত ট্রাম্প সংক্রান্ত সংবাদের উপর নির্ভরশীল এবং তার নীতিমালা নিয়ে মার্কেটের ট্রেডারদের মধ্যে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। মনে রাখতে হবে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও, তার সুবিধা ডলারের জন্যই বেশি—কারণ এখন পর্যন্ত শুল্ক বা নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত প্রতিটি খবরেই ডলারের দরপতন হয়েছে। বর্তমানে এই বাণিজ্যযুদ্ধে বিরতি সংক্রান্ত কোনো ইতিবাচক খবরে ডলারের ঘুরে দাঁড়ানো উচিত, কিন্তু মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো মার্কিন মুদ্রার প্রতি আস্থা রাখতে পারছে না।
বৃহস্পতিবার, মূলত টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর ভিত্তিতে GBP/USD পেয়ারের ট্রেডিং করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যদিও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটও প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তবুও ধরে নেওয়া যেতে পারে, মার্কেটের ট্রেডাররা আবারও ডলার বিক্রির জন্য যেকোনো অজুহাত খুঁজবে।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচনায় রাখা লেভেলগুলো হলো: 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329, 1.3365, 1.3421–1.3440, 1.3488, 1.3537, 1.3580–1.3598।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে জিডিপি এবং শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। তবে আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি, এই সপ্তাহের বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদনের দুর্বল ফলাফল ট্রেডারদের মধ্যে তেমন উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারেনি। যুক্তরাষ্ট্রে খুচরা বিক্রয় (Retail Sales) এবং উৎপাদক মূল্য সূচক (PPI) প্রকাশিত হবে—যা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।